বড়লেখা

বড়লেখায় পিতাকে ফোনকলে রেখে ফ্রান্সে ছেলেকে হত্যা!

আশফাক জুনেদ, বড়লেখা: ফ্রান্সের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বড়লেখার কাওছার হামিদ আলী (৩৫) নামের এক যুবক মৃত্যুবরণ করেছেন। গত (১৩ অক্টোবর) বৃহস্পতিবার ফ্রান্সের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। কাওছার বড়লেখা পৌরসভার পানিধার গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে। তার পিতার অভিযোগ তাকে ফোনকলে রেখেই বড়লেখা ও কুলাউড়ার কিছু যুবক তার ছেলেকে অমানুষিক নির্যাতন করে হত্যা করেছেন।

আবুল হোসেন বলেন, ‘ গত ২০ সেপ্টেম্বর ভোরে আমার ছেলে কাওছারকে আটকে রেখে ফ্রান্স থেকে আমার কাছে সামাদ আহমদ তানিম নামের এক যুবক টেলিফোন করেন। তিনি ফোন করে আমার কাছে কাওছারের পরিচয় জানতে চান। কাওছার আমার ছেলে হয় তাকে জানালে তিনি জানান বড়লেখা ও কুলাউড়ার কিছু যুবক আমার ছেলের কাছে ঘর ভাড়ার টাকা পান। কিন্তু সে নাকি টাকা গুলো দিচ্ছে না। সে (কাওছার) কেনো এমন করছে। তখন আমি তাকে বলি বাবা এ বিষয়ে তো আমি কিছুই জানিনা। এসময় আমাকে ফোনকলে রেখেই আমার ছেলেকে মারার জন্য এক যুবক বাকিদের নির্দেশ দিতে শুনি। তাকে আঘাত করার শব্দ পাই। একজন আমার ছেলেকে উদ্দেশ্য করে বলেন তোর বাবার সাথে কথা বলবি, তখন আমার ছেলের কোন সাড়া শব্দ পাওয়া যায়নি। ওদের আঘাতেই আমার ছেলে হয়তো তখন জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। ওরা আমার ছেলেকে হত্যা করে ফেলেছে। এই বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন আবুল হোসেন।

তিনি আরও বলেন, ‘ ওই দিনের পর থেকে আমার ছেলের সাথে কোন যোগাযোগ নেই। এরপর ফ্রান্স প্রবাসী আত্মীয় স্বজন ও পরিচিতজনদের সাথে যোগাযোগ করি। কিন্তু কেউ আমার ছেলের সন্ধান দিতে পারেনি। এরপর গত বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি কাওছার মারা গেছে। সে নাকি ওইদিনের পর থেকে ফ্রান্সের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলো। দীর্ঘ ২৩ দিন কোমায় থেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৩ অক্টোবর সে মারা যায়।

কাওছারের পারিবারিক সুত্রে জানা গেছে, ১২ বছর আগে স্টুডেন্ট ভিসায় লন্ডন পাড়ি জমান কাওছার হামিদ আলী। সেখানে ৭ বছর থাকার পর বৈধতা না পাওয়ায় ৫ বছর আগে পাড়ি জমান ইউরোপের দেশ ফ্রান্সে। এরপর থেকে সেখানেই তিনি বসবাস করে আসছেন। তিনি খাবার ডেলিভারির কাজ করতেন। এক যুগেরও বেশি সময় প্রবাসে থাকা কাওছার এখনো অবিবাহিত।

এ বিষয়ে ফ্রান্স প্রবাসী সিনিয়র সাংবাদিক নূরুল ওয়াহিদ বলেন, ‘ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এক ব্যক্তি আমাকে জানিয়েছেন গত ২০ সেপ্টেম্বর রাতে প্যারিসের মাখদরমি এলাকায় উবারের আইডি নিয়ে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে কয়েকজন যুবক প্রথমে আলীর ঘাড়ে আঘাত করে। এরপর পেছন থেকে ধাক্কা দিয়ে সড়কের ওপরে ফেলে দেয়। এতে আলী জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে হামলাকারীরা দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পরে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় সেখানকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে ২৩ দিন তিনি কোমাতে ছিলেন। এরপর ১৩ অক্টোবর মারা যান।

তিনি আরও বলেন, ‘৩৮০ ইউরোর জন্য ফ্রান্সে প্রাণ দিতে হয়েছে কাওছার হামিদ আলীকে। নেপথ্যে একটি টেলিফোন নাম্বার। হামিদের বাবাকে ফোনে রেখেই হামিদকে হত্যা করে হত্যাকারিরা

Back to top button