সাকাপুত্রের স্লোগানের প্র তিবাদে শাহবাগে বি ক্ষোভ সমাবেশ

মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসি কার্যকর হওয়া সালাহউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরীর ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্যের প্রতিবাদে রাজধানীর শাহবাগে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে স্বাধীনতার স্বপক্ষের সংগঠন গৌরব ’৭১। সমাবেশ থেকে হুম্মাম কাদেরের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিও জানিয়েছে সংগঠনটি।
শনিবার (১৫ অক্টোবর) বিকেলে শাহবাগ প্রজন্ম চত্বরে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক একেএম আফজালুর রহমান বাবু বলেন, জিয়া ক্ষমতায় আসার পর স্বাধীনতা বিরোধীদের রাজনীতিতে এনে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসিয়েছে। পরবর্তীতে খালেদা জিয়াও একই কাজ করেছে। ১৯৮১ সালে জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশে এসে রাজাকারদের বিচারের চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ইনডেমনিটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে বিচারের পথ বন্ধ করে রাখা হয়েছিল। তারপরেও বঙ্গবন্ধুকন্যা যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসিতে ঝুলিয়েছেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধী রাজাকার সাকা চৌধুরীর পুত্র হুম্মাম কাদের চৌধুরীর ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্যে আমি অবাক হইনি। কারণ, রাজাকারের সন্তান তো রাজাকারের মতোই কথা বলবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এসব স্বাধীনতা বিরোধীদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম বলেন, এ শাহবাগ দাবি আদায়ের চত্বর। এ চত্বরে দাঁড়িয়ে এর আগে আমরা বলেছিলাম- ফাঁসি, ফাঁসি, ফাঁসি চাই, কাদের মোল্লার ফাঁসি চাই। আজও এ চত্বরে দাঁড়িয়ে বলতে চাই, অবিলম্বে হুম্মাম কাদেরের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা হওয়া উচিত।
বীর মুক্তিযোদ্ধা বিচ্ছু জালাল বলেন, মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশকে ক্ষতবিক্ষত করার জন্য যুদ্ধাপরাধী, রাজাকার সাকা চৌধুরীরপুত্র হুঙ্কার দিয়েছে। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, মুক্তিযোদ্ধারা অস্ত্র জমা দিয়েছি কিন্তু ট্রেনিং জমা দেননি।
এ আয়োজনের জন্য গৌরব ‘৭১ কে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, গৌরব ৭১ সাহসী মায়ের, সাহসী সন্তানদের সংগঠন। কাজেই এ সংগঠনের দাবি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মেনে নিয়ে হুম্মামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে উদাত্ত আহ্বান জানাই।
বাংলা একাডেমি পুরস্কার প্রাপ্ত কবি আসলাম সানি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের একজন সন্তান বেঁচে থাকতেও স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তিকে কখনই ধৃষ্টতা দেখানোর সুযোগ দেওয়া যাবে না।
বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন মজুমদার বলেন, আমরা মুক্তিযোদ্ধারা বেঁচে আছি। আমাদের সন্তানরাও বেঁচে আছে। কাজেই কোনো যুদ্ধাপরাধীর সন্তান বাংলাদেশে থাকতে পারবে না। আমি দাবি জানাচ্ছি, আগামী ১০০ বছর কোনো রাজাকারের সন্তান কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্য হতে পারবে না এবং একই সঙ্গে তাদের সন্তানদের কোন সরকারি চাকরিতে নিয়োগ দেওয়া যাবে না।
গৌরব ’৭১ এর সাধারণ সম্পাদক এফ এম শাহীন বলেন, বিএনপির নামে স্বাধীনতা বিরোধীদের যে ফ্রন্ট, তারা ওই মহাসমাবেশে এদেশের স্বাধীনতাকে কলঙ্কিত করেছে। তাদের এ সমাবেশে যুদ্ধাপরাধী রাজাকার সাকা চৌধুরীপুত্র হুম্মাম কাদের চৌধুরী ‘নারায়ে তাকবির-আল্লাহু আকবার’ স্লোগান দিয়ে দণ্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধীদের ‘শহীদ’ বলে আখ্যা দিয়েছে।
আওয়ামী যুব মহিলা লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট কোহেলী কুদ্দুস মুক্তি বলেন, আমরা বাংলাদেশকে ভালোবাসি। অথচ স্বাধীনতার এত বছর বছর পরেও আমাদের যুদ্ধাপরাধী সাকা চৌধুরীর সন্তানদের হুঙ্কার শুনতে হয়। এটা কীভাবা যায়?
এছাড়া সমাবেশে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি মানিক লাল ঘোষ। বিবার্তা২৪ এর সম্পাদক ও প্রকাশক বাণী ইয়াসমিন হাসি, আফসানা ফেরদৌস কেকা, গৌরব গৌরব ৭১ এর সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল ইসলাম রূপমসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিশিষ্ট রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তি, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।