বিয়ানীবাজার সংবাদ

শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় কবি ফজলুল হককে শেষ বিদায়

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বিয়ানীবাজারের কীর্তি সন্তান আশির দশকের শক্তিমান কবি ও বিয়ানীবাজার প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কবি ফজলুল হককে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় শেষ বিদায় জানিয়েছেন শুভাকাঙ্খী ও আত্নীয় স্বজনরা। বুধবার (২৭ জুলাই) বিয়ানীবাজার পিএইচজি মাঠে তার জানাযার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিয়ানীবাজার সহ সিলেটের বিপুল মানুষ অংশগ্রহণ করেন। জানাযার নামাজ শেষে কবিকে তার পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

শোকসভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিয়ানীবাজার পৌরসভার প্রথম মেয়র মো. আব্দুস শুকুর ও মরহুমের পরিবারের পক্ষে তাঁর বড় ছেলে অলক।

সিনিয়র সাংবাদিক মিলাদ মোহাম্মদ জয়নুলের পরিচালনায় জানাযা পূর্ববর্তী সময়ে কবির স্মৃতিচারন করেন বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক দ্বারকেশ চন্দ্র নাথ, শিক্ষাবিদ আলী আহমদ, উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কাশেম পল্লব, ভাইস চেয়ারম্যান মো. জামাল হোসেন, পৌর মেয়র ফারুকুল হক, আওয়ামীলীগ সভাপতি আতাউর রহমান খান, সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান মাকসুদুল ইসলাম আউয়াল, বিয়ানীবাজার প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি খালেদ জাফরী, পঞ্চখন্ড গোলাবিয়া পাবলিক লাইব্রেরীর সাধারণ সম্পাদক আবু আহমদ সাহেদ প্রমুখ।

উল্লেখ্য, গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৪ টায় সিলেটের শ্যামলী এলাকার বাসভবনে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। জানা যায় গত কিছু দিন থেকে শারিরীক নানা সমস্যা ভুগছিলেন তিনি সব শেষ স্টোক করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬১ বছর। তিনি স্ত্রী,২ পুত্র, এক কন্যাসহ অসংখ্য আত্মীয় স্বজন ও গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।

এদিকে কবি ফজলুল হকের মৃত্যুতে সর্ব মহলে নেমে এসেছে শোকের ছায়া সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সহ বিশিষ্টজনের শোক বার্তায় মরহুমের শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।

কবি ফজলুল হক ১৯৬১ সালের ১ সেপ্টেম্বর বিয়ানীবাজার পৌর এলাকার কসবা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ফজলুল হক কবিতা লেখার পাশাপাশি লিখেছেন গদ্য ও গীতিকবিতা। তিনি বাংলাদেশ বেতারের খ্যাতিমান গীতিকার। একজন প্রগতিশীল সংস্কৃৃতিকর্মী ও সাংবাদিক হিসেবে তার সুনাম আছে। কবিতা ও গদ্য রচনায় রয়েছে তার নিজস্ব বৈশিষ্ট্য।

তার প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘পৃথক দংশন’, ‘কবির জন্মদিন’, ‘শঙ্খ ঘোষের সঙ্গে নির্বাসনের দিনে’। সম্পাদনা গ্রন্থ ‘তপোধীর ভট্টাচার্য :জীবন ও কর্ম’ ইত্যাদি।

আশির দশকের বাংলাদেশের সমকালীন কবিতার এই অগ্রণী কবির কবিতা রচনার মূল বিষয়বস্তু হলো বর্ণময় গ্রাম ও শহর। ঢাকা ও কলকাতা থেকে প্রকাশিত পত্রপত্রিকা এবং সাহিত্য সংকলন ও সাময়িকীতে নিয়মিত তার লেখা প্রকাশিত হয়। দার্শনিক পণ্ডিত রঘুনাথ শিরোমণি, শ্রীচৈতন্য পার্ষদ শ্রীবাস পণ্ডিত, কবি বৃন্দাবন দাস, মহেশ্বর ন্যায়লঙ্কার, শহীদ বুদ্ধিজীবী ড. জি সি দেব ও কবি তাত্ত্বিক অধ্যাপক ড. তপোধীর ভট্টাচার্য প্রমুখের জন্মভূমি পিতৃভূমি পঞ্চখণ্ডের মনীষা ও পরম্পরার নিকটতম প্রতিনিধি এই কবি।

Back to top button