বড়লেখা

বড়লেখায় করোনা জয়ী পুলিশ সদস্যের গল্প

আশফাক জুনেদ,বড়লেখা:: মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলায় প্রথম করোনা রোগী পুলিশ সদস্য সুব্রত কুমার দাস সুস্থ হয়েছেন।স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও পুলিশের তাৎক্ষণিক সহযোগিতার মাধ্যমে বাসায় থেকে চিকিৎসা নিয়ে তিনি করোনাকে জয় করেছেন।চোখের সামনে অন্য করোনা আক্রান্ত রোগীর লাশের মিছিল দেখেও দৃঢ় মনোবল আর সবার ভালবাসাই করোনা আক্রান্ত হওয়ার আঠারো দিনের মধ্যেই সুস্থ হয়ে কাজে যোগদান করেছেন এ পুলিশ সদস্য।

বিয়ানীবাজার টাইমসের এ প্রতিবেদকের সাথে কথা হয় করোনা আক্রান্ত পুলিশ সদস্য সুব্রত কুমার দাসের। তিনি জানান, শরীরে ঠান্ডা-জ্বর, কাশির উপসর্গ দেখা দিলে গত মাসের ২০ তারিখে করোনা পরিক্ষার জন্য নমুনা দেন।এরপর ২৩ তারিখ তাঁর করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে।করোরা শনাক্তের পর স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশে তিনি থানা কোয়ার্টারে আইশোলেসনে থেকে চিকিৎসা নেন।

করোনা আক্রান্ত হয়ে আইশোলেসনে কাটানো আঠারো দিনের অভিজ্ঞতা বলতে বলতে সুব্রত থমকে যান। তিনি বলেন, দীর্ঘ আঠারো দিন করোনার সাথে যুদ্ধ করে জয়লাভ করেছি।আমি মনে করি আমি দ্বিতীয় জীবন পেয়েছি।করোনা আক্রান্ত হয়ে দেশে প্রতিদিনই মানুষ মারা যাচ্ছে।ভয় হতো এই মৃত্যুর মিছিলে আমিও চলে যেতে পারি।বাঁচা- মরার প্রশ্নে ভাবতে থাকতাম। চোখের পরিবার, সহকর্মীদের সাথে কাটানো স্মৃতি ভেসে উঠত। তারপরেও মনোবল হারাইনি।চিকিৎসকদের নির্দেশ মেনে ওষুধ সেবন করেছি। নিয়মিত গরম পানি পাশাপাশি ভিটামিস-সি সমৃদ্ধ ফলমূল খেয়েছি। এতে ধীরে ধীরে আমার শারীরিক উন্নতি হতে থাকে।

তিনি বলেন,আমাদের প্রতিনিয়ত মাঠে কাজ করতে হয়। মানুষের সংস্পর্শে যেতে হয়। কখন কিভাবে করোনা সংক্রমিত হয়েছি বুঝতে পারিনি। হঠাৎ জ্বর-কাশি দেখা দেয়ায় নমুনা পরীক্ষা করি। এরপর করোনা পজিটিভ আসে। তবে আমি ঘাবড়ে যাইনি। বিশ্বাস ছিল, আবারও সুস্থ হয়ে কাজে ফিরবো। আমার বিশ্বাসের জয় হয়েছে। আবারও কাজে ফিরতে পেরে ভালো লাগছে।’

করোনার কারণে কি কি সমস্যা দেখা দিত ওই সময় জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার শরীর প্রচন্ড দুর্বল ছিল। কয়েক দিন কিছু খেতে কষ্ট হতো । পরে ধীরে ধীরে শারীরিক অবস্থার উন্নতি হতে থাকে। পরবর্তীতে দুই বার নমুনা পরীক্ষা করা হয়। দুই বারই রির্পোট নেগেটিভ আসে। গত ১১ জুলাই শনিবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাকে ছাড়পত্র দেয়। বর্তমানে সুস্থ আছেন বলে তিনি জানান। শুরু থেকে শেষ পর্য়ন্ত চিকিৎসাধীন পর্যন্ত কোন টাকা খরচ হয়নি।

সুস্থতার সময় সার্বক্ষণিক খবর রাখার জন্য স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ, পুলিশ বিভাগ, প্রশাসনের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানান তিনি। পাশাপাশি সবাইকে করোনায় আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হবার পরার্মশ দেন। আর গরম পানি ও ভিটিামিন সি জাতীয় খাবার গ্রহনের কথা বলেন।

বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.রত্নদ্বীপ বিশ্বাস জানান, ওই পুলিশ সদস্যের নমুনা আমরা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠাই। রির্পোট পজিটিভ আসার সাথে সাথে আমরা তাকে থানা কোয়ার্টারে আইশোলেসনে থাকতে বলি। আর ফোনে সার্বক্ষণিক তার খোঁজ খবর রাখি।

বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াছিনুল হক জানান, পুলিশ সদস্য সুব্রত কুমার দাসের নমুনা পরীক্ষা থেকে শুরু করে সার্বক্ষণিক বড়লেখা থানা পুলিশ সাথে ছিল।

Back to top button