বড়লেখা

বড়লেখায় কালের আবর্তে হারিয়ে যাচ্ছে মাটির ঘর

আশফাক জুনেদ,বড়লেখাঃএক সময় মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার গ্রামাঞ্চলে প্রতিটি ঘর ছিল মাটির তৈরি। কালের আবর্তে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী এসব মাটির ঘর। ঝড়-বৃষ্টি থেকে বাঁচার পাশাপাশি তীব্র গরম ও কনকনে শীতে আদর্শ বসবাস-উপযোগী মাটির তৈরি এসব ঘর আগের মতো এখন আর তেমন একটা নজরে পড়ে না। শুধু মাটির বাড়িই নয়, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ধান-চাল রাখার জন্য মাটির তৈরি গোলা ঘর ও ঢেকিও এখন চোখে পড়েনা।

সরেজমিনে উপজেলার দাসের বাজার ইউনিয়নের ও উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে দেখা যায়, এক সময় এসব এলাকার প্রায় প্রতিটি ঘর ছিল মাটির তৈরি। কিন্তু আধুনিকতার সংস্পর্শে এখন মানুষের জীবনযাত্রার মান বেড়েছে। গ্রামে গ্রামে পৌঁছে গেছে বিদ্যুৎ। গ্রামীণ অর্থনীতির গতি সচল হওয়ায় মাটির ঘরের পরিবর্তে তৈরি হচ্ছে পাকা ঘর। কয়েক বছর পর পর মাটির ঘর সংস্কারের ঝামেলা আর ব্যয়বহুল দিক পর্যবেক্ষণ করে মাটির ঘরের পরিবর্তে দালান-কোঠা বানাতে উৎসাহী হয়ে উঠেছেন এখানকার মানুষেরা।

দাসেরবাজার ইউনিয়নের হাফিজ আহমদ নামের এক যুবক জানান, মাটির ঘর তৈরি করতে প্রথমে এঁটেল বা আঠালো মাটি কাদায় পরিণত করে দুই-তিন ফুট চওড়া করে দেয়াল তৈরি করা হতো। ১০-১৫ ফুট উঁচু দেয়ালে কাঠ বা বাঁশের সিলিং তৈরি করে তার ওপর খড় অথবা টিনের ছাউনি দেওয়া হতো। এসব মাটির ঘর তৈরি করতে কারিগরদের সময় লাগত দেড় থেকে দুই মাস।

দাসের বাজার ইউনিয়নের একটি গ্রামের মাটির ঘরের ছবি

উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের নাবিল আহমদ বলেন, এক সময় আমাদের এলাকার প্রতিটা ঘর মাটি দিয়ে তৈরি করা হতো। অনেকেই মাটি, বাঁশ, টিন সংগ্রহ করে নিজেরাই মাটির ঘর তৈরি করতেন। এ ঘরগুলোর স্থায়িত্ব শতবছর পর্যন্ত হতে পারে। কিন্তু এখন আর মাটির ঘর তেমন একটা দেখা যায় না। সময়ের সঙ্গে মাটির ঘরগুলো হারিয়ে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।

উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের একটি গ্রামের মাটির ঘরের ছবি
Back to top button